কিস্তিমাত
-রীণা চ্যাটার্জী
বাড়িগুলো সব বদলে ফেলেছে ছাঁচ,
সদর-উঠোন মুছে দিয়ে উঠেছে পৃথক পাঁচ,
সারা পাড়া জুড়ে ওঠে না রাতের আওয়াজ,
তবুও মৃদু কড়ানাড়া মাঝ রাতে
ভেসে আসে মাঝে মাঝে,
“অবনী বাড়ি আছো?”
জানো না বুঝি ‘অবনী’ হয়েছে নিখোঁজ?
তবু তার খোঁজে নিঃঝুম তোলপাড়,
বেইমান জাত রাতের আঁধারেই ভেক ধরে
মুখোশের আড়ালে অবনী-কে খুঁজে যায়।
লুকিয়েছে অবনী, হারিয়ে যাবে বলে,
সেই কথা পথ জানে আর জানে অবনীর প্রাণ, সংগ্ৰাম ছিল মুঠোবন্দী ডোরে…
রাতের পৃথিবীকে চিনে নিতে যতটুকু দেরী,
নিখোঁজ হয়েছে পথকে সঙ্গী করে,
অবনী ফেলে গেছে কথা দোরে,
অবনী চলে গেছে কাক ভোরে।
অবনী মিশে আছে অভিযাত্রিকের ভিড়ে।
শুনছো ছদ্মবেশী, হয়েছে তোমার দেরী,
অনেক দেরী- ফিরে যাও এবার..
রাতঘুম আর নষ্ট করো না কড়া নেড়ে,
মুখোশ বদলেও হেরে গেছ তোমরা,
লক্ষ তারার ভিড়ে বেঁচে আছে আজও সে-
কিস্তিমাতের কিসমতে জিতে গেছে অবনী।
(‘অবনী’ এক প্রতীকী চরিত্র রূপে ব্যবহার করা হয়েছে। যে সমাজের নগ্ন রূপের রহস্য ও ষড়যন্ত্র জানতে পেরে হারিয়ে বাঁচতে চেয়েছে নতুন পরিচয়ে। যদিও শ্রদ্ধেয় কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের বিখ্যাত কবিতা ‘অবনী বাড়ি আছো’- র মূল চরিত্রটির নাম ব্যবহার করা হয়েছে, তবে তা নিতান্তই অপ্রাসঙ্গিক অর্থে। তবুও অজান্তেই কারোর ভাবাবেগের আঘাতের কারণ হলে ক্ষমাপ্রার্থী)